Tuesday, March 13, 2012

৩০০ যাত্রী নিয়ে মেঘনায় লঞ্চডুবি

মৃতদেহ উদ্ধার করছে ডুবুরি দল
মুন্সিগঞ্জে মেঘনা নদীতে ৩০০ যাত্রী নিয়ে ডুবে যাওয়া শরীয়তপুর-১ নামের লঞ্চ থেকে নারী, শিশুসহ এ পর্যন্ত মোট ৩২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লঞ্চটি গতকাল সোমবার রাত সাড়ে নয়টায় শরীয়তপুরের সুরেশ্বর থেকে ঢাকা যাত্রা করেছিল। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মান্নান
হাওলাদার প্রথম আলোকে এ কথা জানান। তিনি বলেন, শতাধিক লোকের নিখোঁজ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। উদ্ধারকাজ সম্পর্কে তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত লাশ পাওয়া যাবে, ততক্ষণ উদ্ধারকাজ চালাব।

উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা এখনো ঘটনাস্থলে পৌঁছায়নি। বিআইডব্লিউটিএর জ্যেষ্ঠ উপপরিচালক (ট্রাফিক-সদরঘাট) মো. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলো অনলাইনকে জানান, সকালে বরিশাল থেকে থেকে রওনা হয়েছে জাহাজ হামজা। জাহাজটি পৌঁছতে সন্ধ্যা সাত-আটটা বেজে যেতে পারে।
বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক এমদাদুল হক জানান, উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। এদিকে এ ঘটনায় নৌমন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেকের পরিবারকে ৩০ হাজার টাকা এবং একই পরিবারের একাধিক সদস্য হলে ৪৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এ ছাড়া দাফন-কাফনের জন্য অতিরিক্ত তিন হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা জানান তিনি।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে প্রায় ৩০০ যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি ডুবে যায়। গজারিয়া উপজেলার লঞ্চঘাটের কাছাকাছি চরযাত্রা এলাকায় আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় লঞ্চটির অবস্থান শনাক্ত করা হয়। উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম শরীয়তপুরের গজারিয়া লঞ্চঘাটের কাছাকাছি চরযাত্রা এলাকায় পৌঁছে কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএর সহযোগিতায় উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান সামসুজ্জোহা খন্দকার জানান, লঞ্চটি প্রায় ৭০ ফুট পানির নিচে রয়েছে।
গতকাল রাতেই খালিদ হাসান ও লিটন মিয়া নামের লঞ্চের দুই যাত্রী সাঁতরে একটি ট্রলারে উঠতে পারায় প্রাণে বেঁচে গেছেন। ওই দুই যাত্রী মুঠোফোনে আমাদের শরীয়তপুর প্রতিনিধিকে জানান, রাত দুইটার দিকে তেলবাহী একটি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায় লঞ্চটি। এ সময় তাঁরা দুজন সাঁতরে একটি ট্রলারে ওঠেন। তাঁরা বলেন, সাঁতার কেটে আরও ৪০-৫০ জন তীরে উঠেছেন। এ ছাড়া ঢাকাগামী মিতালী নামের একটি লঞ্চ প্রায় ৩০-৩৫ জনকে উদ্ধার করেছে। বাকিরা লঞ্চেই আটকে আছেন বলে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
ঘটনাস্থলে মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক আজিজুল আলম খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা রয়েছেন। এ ঘটনায় বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। যাত্রীদের অধিকাংশই শরীয়তপুরের।

সূত্র: প্রথমআলো.কম, ১৩/০৩/২০১২

No comments:

Post a Comment