Saturday, December 31, 2011

হামিদুল্লাহ খানের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানালো বিএনপি

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সমর নায়ক অবসরপ্রাপ্ত উইং কমাণ্ডার এম হামিদুল্লাহ খানের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিএনপি।

শনিবার সকাল সোয়া ১১টায় এই সাবেক সাংসদের মরদেহ নিয়ে আসা হয় নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। সেখানে মরহুমের কফিন দলীয় পতাকায় ঢেকে দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া। 



বিএনপির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক হামিদুল্লাহ খান শুক্রবার দুপুরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান। তার বয়স হয়েছিলো ৭৪ বছর।

তার পুত্রবধূ রাইসা ওয়ালী খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, হামিদুল্লাহ খান উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন।

শুক্রবার রাতেই এশার নামাজের পর ঢাকা সেনানিবাসের আল্লাহু জামে মসজিদে মরহুমের প্রথম জানাজা হয়। তার মরদেহ রাতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের হিমঘরে রাখার পর সকালে নিয়ে আসা হয় তার সেনানিবাসের বাসায়। সেখানে আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহীরা তাকে শেষবারের মতো দেখতে আসেন।

সকাল সোয়া ১০টায় আল্লাহু মসজিদে এই বিএনপি নেতার দ্বিতীয় জানাজা হয়। দলের সহসভাপতি শমসের মবিন চৌধুরী, সাবেক হুইপ জামাল উদ্দিন, জনকণ্ঠ সস্পাদক আতিকুল্লাাহ খান মাসুদসহ কর্মজীবনের বন্ধু ও স্বজনরা এতে অংশ নেন।

এরপর সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কফিন নিয়ে আসা হয় নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। কালো কাপড়ে ঢাকা বিশেষ মঞ্চে এই মুক্তিযোদ্ধার কফিনে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানান খালেদা জিয়া। প্রথমে তিনি দলীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে দেন হামিদুল্লাহ খানের কফিন। তারপর কফিনে ফুল দিয়ে কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাতও করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন।

কফিনের পাশেই হামিদুল্লাহ খানের স্ত্রী রাবেয়া সুলতানাকে জড়িয়ে ধরে সান্তনা দেন খালেদা জিয়া। এ সময়ে হামিদুল্লাহ খানের বড় ছেলে ও পুত্রবধূসহ স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

এপর মহানগর বিএনপি, যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা, ছাত্র দল,উলামা দল, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (ড্যাব), জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাসসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মরহুমের কফিনে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে মরহুমের তৃতীয় জানাজা হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আর এ গনি, মওদুদ আহমেদ, এম কে আনোয়ার, জমির উদ্দিন সরকার, আ স ম হান্নান শাহ, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাদেক হোসেন খোকা, আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ফজলুর রহমান পটল, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ওসমান ফারুক, শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল হালিম, হায়দার আলী, আমান উল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, রুহুল কবির রিজভী, আবদুস সালাম, শহীদ উদ্দিন চৌধুুরী এ্যানি, খায়রুল কবীর খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিবউন নবী খান সোহেল, এলডিপি সভাপতি অলি অহমেদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা সভাপতি শফিউল আলমসহ কয়েক হাজার নেতা-কর্মী জানাজায় নেন।

জানাজার জন্য নয়া পল্টন সড়কের এক পাশ যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

নয়া পল্টনের কর্মসূচি শেষে মরহুমের কফিন নিয়ে যাওয়া হয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। সেখানে চতুর্থ জানাজা শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে হামিদুল্লাহ খানের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে।

এই এলাকা থেকে ১৯৭৯, ১৯৯১ ও ১৯৯৬ (১৫ ফেব্র“য়ারির নির্বাচন) সালে তিন দফা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন হামিদুল্লাহ খান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ঢাকার একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছিলেন তিনি।

তার বড় ছেলে তারেক আহমদ খান জানান, লৌহজংয়ের কালিয়াখিল মাঠে বাদ আসর আরেকটি জানাজা হবে হামিদুল্লাহ খানের। সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে আসা হবে ঢাকায়, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের হিমঘরে।

ছোট ছেলে জাপান থেকে দেশে ফেরার পর রোববার সকালে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে এই মুক্তিযোদ্ধাকে।

No comments:

Post a Comment